আপনার জীবন বদলে দেওয়ার এক আশ্চর্যজনক উপায়: কীভাবে এই ছোট্ট ডিভাইসটি শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার সাথে লড়াই করে

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্টCochlear Implant হলো এক ধরনের শ্রবণ সহায়ক ডিভাইস যা গুরুতর থেকে পুরোপুরি বধিরতার সাথে লড়াই করতে পারে। বাংলাদেশে, ঢাকা, চট্টগ্রাম এবং সিলেটএর মতো শহরগুলিতে বসবাসকারী হাজার হাজার মানুষ শ্রবণ প্রতিবন্ধকতার সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন। বাংলাদেশ সরকারের স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তথ্য অনুসারে, দেশটিতে প্রতি 1000 জন শিশুর মধ্যে 5-6 জন জন্মগত বা অর্জিত বধিরতাতে ভুগছে।

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট কী? 

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট হল একটি ছোট ইলেকট্রনিক ডিভাইস যা গুরুতর থেকে পুরোপুরি বধিরতা আছে এমন ব্যক্তিদের শ্রবণশক্তি ফিরিয়ে আনতে সহায়তা করে। এটি দুটি প্রধান অংশ নিয়ে গঠিত:

  • বাইরের একটি অংশ, যা কানের পেছনে পরিধান করা হয়
  • একটি অভ্যন্তরীণ অংশ, যা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কোকলিয়া নামক অভ্যন্তরীণ কানের মধ্যে প্রতিস্থাপন করা হয়

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্টটি শব্দ তরঙ্গকে বৈদ্যুতিক সংকেতে রূপান্তর করে যা অডিটোরি স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে এবং মস্তিষ্কের দ্বারা শব্দ হিসাবে বুঝতে পারে।

কে কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট থেকে উপকৃত হতে পারে?

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্টগুলি নিম্নলিখিত ধরনের শ্রবণ ক্ষতিতে সহায়তা করতে পারে:

  • জন্মগত বা শৈশবে অর্জিত বধিরতা
  • মৃদু থেকে মাঝারি শ্রবণ ক্ষতি যা শ্রবণ যন্ত্র দ্বারা সহায়তা পায় না
  • বয়স্কদের মধ্যে বয়সজনিত শ্রবণক্ষয়

রাজশাহী মেডিকেল কলেজের এক গবেষণা অনুসারে, কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের ফলে প্রায় 80% প্রাপ্তবয়স্ক এবং 90% শিশুদের উল্লেখযোগ্য শ্রবণ উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে।

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারির প্রক্রিয়া

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারিটি সাধারণত নিম্নলিখিত ধাপগুলি অন্তর্ভুক্ত করে:

  1. সাধারণ অ্যানেসথেসিয়ার অধীনে রোগীকে রাখা হয়।
  2. পেশীর নিচে ইমপ্ল্যান্টের প্রসেসরটি রাখতে কানের পেছনে একটি ছোট কাট তৈরি করা হয়।
  3. কোকলিয়ার মধ্যে ইলেকট্রোড array সন্নিবেশ করা হয়।
  4. কাটাটি সেলাই দিয়ে বন্ধ করা হয় এবং ইমপ্ল্যান্টকে সুরক্ষিত করা হয়।

খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে, এই ধরনের অপারেশন প্রতি বছর সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়।

অপারেশনের পরে কী আশা করা যায়

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট সার্জারির পরে, রোগীদের অডিওলজিস্ট এবং স্পিচ থেরাপিস্টদের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করতে হবে শ্রবণ দক্ষতা উন্নত করতে এবং কথা বলার দক্ষতা বিকাশ করতে। বেশিরভাগ ব্যক্তির ডিভাইসটির মাধ্যমে শব্দ শুনতে এবং বুঝতে শেখার জন্য কয়েক মাস প্রশিক্ষণ প্রয়োজন হয়।

নিয়মিত ফলোআপ পরীক্ষা এবং প্রোগ্রামিং সেশন কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্টের সাফল্যকে অপ্টিমাইজ করতে গুরুত্বপূর্ণ।

উপসংহার

কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট প্রযুক্তি বধিরতা বা গুরুতর শ্রবণ ক্ষতিযুক্ত ব্যক্তিদের জীবনে একটি বিশাল পার্থক্য তৈরি করতে পারে। বাংলাদেশে, কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট ক্রমবর্ধমান সংখ্যক মানুষের জন্য উপলভ্য হচ্ছে, তাদের শ্রবণ ক্ষমতা পুনরুদ্ধার করতে এবং আরও পূর্ণ এবং সমৃদ্ধ জীবনযাপন করতে সক্ষম করে। যদি আপনি বা আপনার কোনো প্রিয়জন শ্রবণ হ্রাসের সমস্যায় ভুগছেন, তাহলে একজন অডিওলজিস্টের সাথে কথা বলুন এবং কোকলিয়ার ইমপ্ল্যান্ট আপনার জন্য সঠিক বিকল্প কিনা তা নির্ধারণ করুন।

মন্তব্য করুন

Top